মিরপুর চিড়িয়াখানা: দর্শনীয় স্থান, টিকিট মূল্য ও পরিদর্শন গাইড

আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই আশা করি ভালো আছেন আজকে আপনাদের জানাবো কিভাবে আপনারা মিরপুর চিড়িয়াখানা যাবেন , মিরপুর চিড়িয়াখানা যা জাতীয় চিড়িয়াখানা নামেও পরিচিত, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মিরপুর এলাকায় অবস্থিত একটি প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই চিড়িয়াখানাটি দেশের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে সমৃদ্ধ প্রাণী সংগ্রহশালা হিসেবে বিবেচিত হয়। এখানে দেশীয় ও বিদেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখি সংরক্ষিত রয়েছে, যা দর্শকদের জন্য এক অনন্য অভিজ্ঞতা প্রদান করে।​এটি প্রায় ১৮৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং এখানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষিত রয়েছে। এটি প্রাণীদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল তৈরি করে এবং সংরক্ষণের পাশাপাশি বিনোদন ও শিক্ষা দানের সুযোগ করে দেয়।

জাতীয় চিড়িয়াখানার অবস্থান : মিরপুর চিড়িয়াখানা কিভাবে যাব

জাতীয় চিড়িয়াখানাটি ঢাকার মিরপুর-১ এলাকায় অবস্থিত। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে আসার জন্য বাস, সিএনজি, রিকশা কিংবা ব্যক্তিগত যানবাহন ব্যবহার করা যায়।

📍 ঠিকানা: বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা, মিরপুর-১, ঢাকা।

যেভাবে যেতে পারেন:

মিরপুর চিড়িয়াখানা (বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা) ঢাকার মিরপুর-১ এলাকায় অবস্থিত। আপনি ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে বাস, সিএনজি, রিকশা বা প্রাইভেট যানবাহনে সহজেই সেখানে যেতে পারেন।

🚍 বাসে যাওয়ার উপায়:

আপনি ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে নিম্নলিখিত বাস সার্ভিস ব্যবহার করে মিরপুর চিড়িয়াখানায় যেতে পারেন—

  • গাজীপুর/উত্তরা দিক থেকে:
  • বাস: টাঙ্গাইল পরিবহন, বলাকা, পরিস্থান
  • গন্তব্য: মিরপুর-১ স্টপেজ
  • মতিঝিল/গুলিস্তান থেকে:
  • বাস: বিআরটিসি, আজমেরী, অনন্যা পরিবহন
  • গন্তব্য: মিরপুর-১
  • সায়েন্স ল্যাব/ধানমন্ডি থেকে:
  • বাস: উত্তরা পরিবহন, আজমেরী
  • গন্তব্য: মিরপুর-১
  • গাবতলী থেকে:
  • রিকশা/সিএনজি নিয়ে সরাসরি চিড়িয়াখানায় পৌঁছানো যায়
  • মহাখালী থেকে:
  • বাস: বিহঙ্গ, অনন্যা পরিবহন

🚖 সিএনজি/রিকশায় যাওয়ার উপায়:

ঢাকার যেকোনো জায়গা থেকে সিএনজি বা রিকশা নিয়ে সরাসরি “জাতীয় চিড়িয়াখানা, মিরপুর” বললে চালক সহজেই নিয়ে যাবে।

🚗 প্রাইভেট কার বা বাইক:

  • গুগল ম্যাপে “Bangladesh National Zoo, Mirpur” সার্চ করে লোকেশন অনুসরণ করতে পারেন।
  • পার্কিং সুবিধা রয়েছে, তবে ছুটির দিনগুলোতে বেশি ভিড় হতে পারে।

মিরপুর চিড়িয়াখানা কবে বন্ধ থাকে

  • সাপ্তাহিক বন্ধ: প্রতি রবিবার চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকে।

  • খোলার সময়: সকাল ৯:০০ AM থেকে সন্ধ্যা ৬:০০ PM পর্যন্ত।

  • ছুটির দিনে ভিড়: শুক্র ও শনিবার, বিশেষ করে সরকারি ছুটির দিনে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় থাকে।

আরও পোস্ট :ঈদ মোবারক স্ট্যাটাস ২০২৫ – সেরা ঈদের শুভেচ্ছা, উক্তি ও বার্তা

প্রাণী সংগ্রহ ও বৈচিত্র্য

জাতীয় চিড়িয়াখানায় দেশি-বিদেশি বহু প্রজাতির প্রাণী রয়েছে। এখানে রয়েছে—

🐅 বাঘ: রয়েল বেঙ্গল টাইগার, সাদা বাঘ
🦁 সিংহ: আফ্রিকান সিংহ
🐘 হাতি: এশিয়ান হাতি
🦒 জিরাফ: আফ্রিকান জিরাফ
🦓 জেব্রা: বিভিন্ন প্রজাতির জেব্রা
🐒 বানর ও শিম্পাঞ্জি: দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির বানর
🦩 বিভিন্ন প্রজাতির পাখি: তোতা, ময়না, ঈগল, উটপাখি
🐊 কুমির ও সরীসৃপ: কুমির, অজগর, গোসাপ
🦌 হরিণ: চিত্রা হরিণ, সাম্বার হরিণ

প্রাণীগুলো বিভিন্ন উৎস থেকে আসে, যেমন—
✅ বন্য পরিবেশ থেকে উদ্ধার করা প্রাণী।
✅ বিদেশি চিড়িয়াখানা থেকে বিনিময় প্রক্রিয়ায় আনা।
✅ চিড়িয়াখানার নিজস্ব প্রজনন কেন্দ্র থেকে জন্মানো প্রাণী।

মিরপুর চিড়িয়াখানার টিকিট কত

জাতীয় চিড়িয়াখানায় প্রবেশের জন্য টিকিটের মূল্য তুলনামূলকভাবে কম, যাতে সবাই সহজে প্রবেশ করতে পারে।

🎫 টিকিট মূল্য:

  • প্রাপ্তবয়স্ক: ৫০ টাকা

  • শিশু (২-১২ বছর): ২৫ টাকা

  • বিদেশি দর্শনার্থী: ৩০০ টাকা

  • ছাত্রছাত্রী (শিক্ষা সফর): বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়

📍 টিকিট কেনার স্থান: চিড়িয়াখানার মূল ফটকের পাশেই টিকিট কাউন্টার রয়েছে।

জাতীয় চিড়িয়াখানা ভ্রমণের কিছু টিপস

✔️ ভিড় এড়াতে সকালের দিকে যাওয়া ভালো।
✔️ টিকিট কেনার জন্য দীর্ঘ লাইন এড়াতে আগেভাগে পৌঁছানো ভালো।
✔️ শিশুদের জন্য খাবার ও পানির বোতল সঙ্গে রাখুন।
✔️ প্রাণীদের বিরক্ত না করে নির্দিষ্ট দূরত্ব থেকে পর্যবেক্ষণ করুন।
✔️ ফটোগ্রাফির সময় ফ্ল্যাশ ব্যবহার না করা ভালো, কারণ এটি প্রাণীদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

প্রশ্ন-উত্তর সেকশন

প্রশ্ন ১: ঢাকা চিড়িয়াখানা বন্ধ কী বারে?

উত্তর: জাতীয় চিড়িয়াখানা (বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা, মিরপুর) প্রতি রবিবার বন্ধ থাকে। অন্যদিনগুলোতে এটি সকাল ৯:০০ থেকে সন্ধ্যা ৬:০০ পর্যন্ত খোলা থাকে।

প্রশ্ন ২: জাতীয় চিড়িয়াখানার ইতিহাস কী?

উত্তর: বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা ১৯৭৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এটি ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত এবং প্রায় ১৮৬ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। এটি বাংলাদেশের বৃহত্তম চিড়িয়াখানা, যেখানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষিত রয়েছে। এর মূল লক্ষ্য প্রাণী সংরক্ষণ, গবেষণা ও দর্শনার্থীদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা করা।

প্রশ্ন ৩: চিড়িয়াখানা শব্দের অর্থ কী?

উত্তর: “চিড়িয়াখানা” শব্দটি দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত – “চিড়িয়া” অর্থাৎ পাখি বা প্রাণী এবং “খানা” অর্থাৎ বাসস্থান বা স্থান। চিড়িয়াখানা হলো একটি নির্দিষ্ট এলাকা, যেখানে বিভিন্ন প্রজাতির বন্যপ্রাণী ও পাখি সংরক্ষিত থাকে এবং জনসাধারণের জন্য প্রদর্শন করা হয়।

প্রশ্ন ৪: চিড়িয়াখানার প্রাণী কোথা থেকে আসে?

উত্তর: চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো বিভিন্ন উৎস থেকে আসে, যেমন:

  • প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে উদ্ধারকৃত প্রাণী (যারা আহত বা বিপন্ন অবস্থায় থাকে)।

  • দেশি ও বিদেশি সংরক্ষণাগার ও চিড়িয়াখানা থেকে আদান-প্রদান করা প্রাণী।
  • সংরক্ষিত প্রজনন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জন্মানো প্রাণী।
  • কখনও কখনও সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান উপহার দেয়।

শেষ কথা 

মিরপুর চিড়িয়াখানা বাংলাদেশের প্রাণিজগতের এক বিস্ময়কর জগৎ, যা শিক্ষা, গবেষণা ও বিনোদনের সমন্বয়ে গঠিত। প্রাণীদের সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের মাধ্যমে এটি জনগণের মধ্যে প্রাণিজগতের সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে। দর্শকদের জন্য এটি একটি আকর্ষণীয় স্থান, যেখানে তারা বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখির সাথে পরিচিত হতে পারে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের সান্নিধ্যে সময় কাটাতে পারে।​ তো আজকের ব্লগ টি কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাবেন আর এরকম পোস্ট পেতে ওয়েবসাইট টি ফলো করবেন ধন্যবাদ 

Leave a Comment